শেখ রাজীব হাসান,গাজীপুরঃ
এপ্রিলের ১৪ তারিখ বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। এই দিনটি বাংলাদেশের সবচাইতে বড় উৎসবগুলোর একটি। মুসলিম সম্প্রদায়ের দুইটি ঈদের পর পহেলা বৈশাখই দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উদযাপন করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের ন্যায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আনন্দ মুখর পরিবেশে টঙ্গীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজে নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) উতযাপন করা হয়েছে। এসময় মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অবিভাবক ও ছাত্র, ছাত্রীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীরা।
পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ
এখন যেমন বাংলা নতুন বছরের শুরুর দিনটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে, এক সময় তেমন ছিল না। বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ তখন ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে পালিত হত। ইতিহাসবিদদের হিসাব অনুযায়ী ১৫৫৬ সাল থেকে বাংলা সন প্রবর্তন করা হয়। মুঘল সম্রাট জালালউদ্দিন মোহাম্মদ আকবর খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য তার সভার জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লা শিরাজীর সহযোগিতায় ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দে 'তারিখ-এ-এলাহি' নামে নতুন একটি বছর গণনা পদ্ধতি চালু করেন। এটি কৃষকদের কাছে 'ফসলি সন' নামে পরিচিত হয়, যা পরে 'বাংলা সন' বা 'বঙ্গাব্দ' নামে প্রচলিত হয়ে ওঠে। ঐ সময়ে প্রচলিত রাজকীয় সন ছিল 'হিজরি সন', যা চন্দ্রসন হওয়ার প্রতি বছর একই মাসে খাজনা আদায় সম্ভব হতো না।
বাংলা সন শূন্য থেকে শুরু হয়নি,যে বছর বাংলা সন প্রবর্তন করা হয়,সে বছর হিজরি সন ছিল ৯২৩ হিজরি। সে অনুযায়ী সম্রাটের নির্দেশে প্রবর্তনের বছরই ৯২৩ বছর বয়স নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বাংলা সনের।
বাংলা বর্ষের মাসগুলোর নামকরণ হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্রের নামে।
তবে এখন যে রূপে বাংলা নববর্ষ পালন করা হয়, রাজধানী ঢাকায় ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন জনপ্রিয় হয় নি। সেসময় ঢাকায় রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ ও মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করার রীতি চালু হয়, যা এখন সার্বজনীন চরিত্র লাভ করেছে।
সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান বলেন,পহেলা বৈশাখে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটে। এই দিনটি জাতি,ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের সব বাংলাভাষী মানুষকে একত্রিত করে। আমরা এই ঐতিহাসিক দিন উদযাপন করতে পেরে গর্বিত। বৈশাখ বলে নয় আপনাদের সকলের প্রতিটি দিনই হোক অনেক আনন্দময়। দেশবাসী সকলকে জানাই শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা।